ক্যান্সার কি?
শুরুতে আমরা জেনে নেই ক্যান্সার আসলে কি। আমরা জানি, একটি মানবদেহে ট্রিলিয়ন এবং ট্রিলিয়ন কোষ থাকে যা শরীরের মৌলিক কাঠামো তৈরি করে। কোষগুলি সংখায় বৃদ্ধি পেতে পারে, পুরানো হতে পারে এবং মারা যেতে পারে এবং তারপরে আবার নতুন কোষ জন্মাতে পারে। কিন্তু যদি কোষগুলির সংখ্যায় দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বৃদ্ধির অনুপাত মৃত্যুর অনুপাতের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে কী হবে? কোষের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বৃদ্ধি পাবে এবং এটি অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধির কারণ হবে। এই অতিরিক্ত কোষ ভবিষ্যতে টিউমার গঠন করতে পারে। অতিরিক্ত কোষগুলির টিউমার গঠন করার ঘটনাকে ক্যান্সার বলা হয়। তাই শরীরের স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করা বন্ধ করে দিলে ক্যান্সার তৈরী হয়।
চা যেভাবে ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ
চা য়ে Catechin নামক একটি রাসায়নিক যৌগ থাকে যা একটি ফ্ল্যাভোনয়েড গ্রুপের সেকেন্ডারি মেটাবোলাইট । এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। ফ্ল্যাভোনয়েড (catechin) অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আমাদের শরীর ক্রমাগত কিছু অস্থিতিশীল অণু তৈরি করে যেগুলোকে বলা হয় ‘ফ্রি র্যাডিকেল’ বা অক্সিডেন্ট। এই অক্সিডেন্টগুলি স্থিতিশীল হতে চায় তাই তারা অন্য অণু থেকে ইলেক্ট্রন চুরি করে এবং শেষ পর্যন্ত কোষগুলির ক্ষতি করে। এই ক্ষতি কোষগুলিকে ক্যান্সারের ঝুঁকিতে নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর কাজ হলো এই ফ্রি র্যাডিকেল বা অক্সিডেন্টগুলিকে ধ্বংস করা যাতে এরা ক্যান্সার সৃষ্টি করতে না পারে। তারা এই মুক্ত র্যাডিকেলগুলিকে স্ক্যাভেঞ্জ করে এবং জব্দ করে এবং কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। এবং টিউমার কোষের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। Catechin নির্দিষ্ট কিছু এনজাইম যেগুলো ক্যান্সার সৃষ্টি করতে সক্ষম সেসব এনজাইমগুলোর কার্যকলাপকেও বাধা দিতে পারে। তাই চায়ে পাওয়া Catechin ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে।
চা এর অন্যান্য উপকারিতাঃ
এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়ম করে গ্রিন টি এবং ব্ল্যাক টি খান তাদের লিভার, ত্বক ও পাকস্থলীর ক্যান্সার এবং টিউমারের হার কমে যায়। গ্রিন টি তে ব্ল্যাক টি এর তুলনায় বেশি Catechin থাকে। চীনের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে প্রতিদিন 3 গ্রাম চা বা দিনে প্রায় 2 কাপ চা খাওয়া প্রদাহ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।
শুধু চায়েই নয়, ডার্ক চকলেটেও ফ্ল্যাভোনয়েড পাওয়া যায়। যারা চকলেট পছন্দ করেন তাদের জন্যও বেশ উপকারী। এছাড়াও মদ, কমলালেবু, আপেল, আঙ্গুর, পেঁয়াজও ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ। তাই বলে যে মদ খাবেন এমনটি যেন না হয়। বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি মানুষই কমবেশি চা পছন্দ করে। এবং চা খুব সহজলভ্যও। কিন্তু কজনই বা চায়ের এই গুণের কথা জানেন। ফ্ল্যাভোনয়েড কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজিজ, প্রদাহ, অ্যালার্জি ইত্যাদি প্রতিরোধ করতে পারে। তাই, প্রতিদিন 2 কাপ চা আপনাকে অনেক রোগ থেকে নিরাপদ রাখতে পারে।
Similar contents:
1.চিনি খাওয়া কি ভালো? চিনি যে ক্ষতি করে
Pingback: Vitamin C | Dietary sources and metabolism | easy to remember | awesomeBiochem – awesomeBiochem
Pingback: মধু না চিনি কোনটা বেশি উপকারী এবং কেন - awesomeBiochem