গ্লুকোনিওজেনেসিস কি :
Glucose হল আধুনিক জীব, জীবাণু থেকে মানুষ পর্যন্ত সকল উদ্ভিদ ও প্রাণির জন্য একটি সার্বজনীন জ্বালানী এবং বিল্ডিং ব্লক। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে, কিছু টিস্যু তাদের বিপাকীয় শক্তির জন্য সম্পূর্ণরূপে glucose এর উপর নির্ভর করে যেমন- মস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্র, এরিথ্রোসাইটস, টেস্টিস , রেনাল মেডুলা, ভ্রূণীয় টিস্যু ইত্যাদি। শুধুমাত্র মস্তিষ্কের জন্য প্রতিদিন প্রায় 120 গ্রাম glucose প্রয়োজন যা সমস্ত গ্লুকোজের অর্ধেকেরও বেশি। লিভার এবং পেশীতে গ্লাইকোজেন হিসাবে glucose জমা থাকে । কিন্তু অতিরিক্ত ব্যায়াম বা দীর্ঘ সময় ধরে না খেয়ে থাকলে অর্থাৎ দীর্ঘ উপবাস করলে এইরকম পরিস্থিতিতে লিভার গ্লাইকোজেন থেকে glucose সরবরাহ পর্যাপ্ত হয় না। সুতরাং, এই ধরনের পরিস্থিতিতে গ্লুকোজের চাহিদা পূরণের জন্য নন-কার্বোহাইড্রেট সাবস্ট্রেট থেকে glucose যেন সংশ্লেষণ করা যায় সেজন্য একটি পদ্ধতির প্রয়োজন। এবং এই পদ্ধতিটি gluconeogenesis (গ্লুকোজ গঠন) এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
Gluconeogenesis হল একটি বিপাকীয় প্রক্রিয়া যা নির্দিষ্ট নন-কার্বোহাইড্রেট সাবস্ট্রেট থেকে গ্লুকোজ (চিনি) তৈরি করে।
গ্লুকোনিওজেনেসিস সমস্ত প্রাণী, উদ্ভিদ, ছত্রাক এবং অণুজীবের মধ্যে ঘটে। প্রাণীদের মধ্যে গ্লুকোজের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল হল ল্যাকটেট, পাইরুভেট, গ্লিসারল এবং কিছু অ্যামিনো অ্যাসিড। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে, গ্লুকোনিওজেনেসিস লিভার, রেনাল কর্টেক্স, ক্ষুদ্রান্ত্রের এপিথেলিয়াল কোষে ঘটে ।
গ্লুকোনিওজেনেসিস পথটি অত্যন্ত এন্ডারগোনিক বা তাপহারী প্রক্রিয়া। যখন ATP বা GTP এর হাইড্রোলাইসিসের সাথে মিলিত হয় তখন এটি কার্যকর ভাবে তাপ উৎপাদী বা এক্সারগোনিক বিক্রিয়ায় পরিণত হয়। উদাহরণস্বরূপ, পাইরুভেট থেকে গ্লুকোজ – 6- ফসফেট তৈরী হওয়ার পথটি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে হওয়ার জন্য 4 অণু ATP এবং 2 অণু GTP প্রয়োজন পড়ে। এই ATP গুলি ফ্যাটি এসিডের বিটা অক্সিডেশনের মাধ্যমে সরবরাহ হয়।
গ্লুকোনিওজেনেসিস এবং গ্লাইকোলাইসিস পরস্পর বিপরীত দিকে সংঘঠিত হয়:

গ্লুকোনিওজেনেসিস এবং গ্লাইকোলাইসিস অভিন্ন পথ নয়। তারা বিপরীত দিকে ছুটছে। যদিও বেশ কয়েকটি ধাপ উভয় ক্ষেত্রেই একইরকম, 10টি এনজাইমেটিক বিক্রিয়ার মধ্যে 7টি বিক্রিয়া গ্লাইকোলাইসিসের সম্পূর্ণ বিপরীত। গ্লুকোনিওজেনেসিস প্রধানত মেরুদণ্ডী প্রাণীর লিভারে এবং সামান্য পরিমাণে কিডনির কর্টেক্সে ঘটে। এছাড়াও স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্ষুদ্রান্ত্র, পেশি এমনকি ব্রেইনের এস্ট্রোসাইট কোষেও গ্লুকোনিওজেনেসিস ঘটে। লিভার গ্লুকোনিওজেনেসিস এর precursor হিসেবে ল্যাকটেট, গ্লিসারল এবং গ্লুকোজেনিক অ্যামিনো এসিড ব্যবহার করে। অন্যদিকে কিডনি ল্যাকটেট, গ্লুটামিন এবং গ্লিসারল ব্যবহার করে। কোরি সাইকেল (Cori cycle) থেকে যে ল্যাকটেট আসে সেটা গ্লুকোনিওজেনেসিস ঘটানোর জন্য কিডনির সবচেয়ে বড় উৎস। তাছাড়া গ্লুকোনিওজেনেসিস একটি সার্বজনীন প্রক্রিয়া যা প্রাণী, উদ্ভিদ, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য অণুজীবের মধ্যে বিদ্যমান।
সব প্রজাতিতেই পাইরুভেট থেকে অক্সালোএসিটেট তৈরী এবং TCA cycle মাইটোকন্ড্রিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। আর যে এনজাইম গুলো ফসফোইনল পাইরুভেট থেকে গ্লুকোজ-6-ফসফেট তৈরী করে সেগুলো পাওয়া যায় সাইটোসলে।
গ্লুকোনিওজেনেসিস নিয়ন্ত্রণ:

গ্লুকোনিওজেনেসিসের উদ্দেশ্যই হল গ্লুকোজ তৈরি করা। অর্থাৎ শরীরে যখন গ্লুকোজ বা গ্লাইকোজেন কোনোটিই আর অবশিষ্ট থাকে না তখন আমাদের শরীর এই পথটি বেছে নেয়। শরীরে কোনো glucose না থাকা মানে গ্লাইকোলাইসিস হতে পারছে না এবং ATP তৈরী হতে পারছে না অর্থাৎ গ্লুকোজ নেই মানে ATP নেই এবং ATP নেই মানে শক্তিও নেই। আর শক্তি নেই মানে আমাদের শরীর নস্তেজ হয়ে পড়বে। তাই শক্তি উৎপন্ন করার জন্য শরীরকে গ্লুকোজ থেকে ATP তৈরি করতে হবে অর্থাৎ গ্লুকোজ তৈরী করতে হবে। সুতরাং, ATP তখন গ্লুকোজ ভাঙ্গার সব এনজাইমকে নেগেটিভলি ইনএকটিভেট করে দিয়ে গ্লাইকোলাইসিস পথকে আটকে দেয় এবং গ্লুকোনিওজেনেসিসকে হতে সাহায্য করে যাতে গ্লুকোজ তৈরী হতে পারে। সাইট্রেট ATP এর মতই কাজ করে। অপরদিকে AMP ATP এর বিপরীত কাজ করে। AMP এবং F-2,6-BP গ্লাইকোলাইসিস পথকে একটিভেট করে। এরা PFK1 এনজাইমটিকে পজিটিভলি একটিভেট করে যাতে করে গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে এবং F-1,6-BPase এনজাইম নিষ্ক্রিয় করে গ্লুকোনিওজেনেসিসকে বাধা দেয়। অন্যদিকে এসিটাইল-কোএ গ্লুকোজের ঘাটতির প্রতি সাড়া দেয়। যখন গ্লুকোজের প্রয়োজন হয়, এসিটাইল-কোএ পাইরুভেট কার্বক্সিলেজ এনজাইমকে পজিটিভলি নিয়ন্ত্রণ করে যা গ্লুকোনিওজেনেসিসকে উৎসাহিত করে।
Related articles:
গ্লুকোজ কিভাবে দেহে নিয়ন্ত্রিত হয়?
Glucose-6-phosphate dehydrogenase deficiency(favism) | a rare desease | বাংলায়
GFR regulation – বাংলায় | simple & easy
Pingback: লাইসোজাইম এর কাজ, মেকানিজম, ওভারভিউ - awesomeBiochem
Pingback: G6PD deficiency(favism) | a rare disease | বাংলায়
Pingback: GFR regulation – বাংলায় | simple & easy - awesomeBiochem
Pingback: G6PD deficiency risk factors and causes - awesomeBiochem
Pingback: Factors affecting GFR | simple & easy - awesomeBiochem