
পেঁয়াজ কোষ এর স্লাইড তৈরির পদ্ধতিঃ
- প্রথমে আমরা পেঁয়াজটিকে এমনভাবে কাঁটি যেন একটি ভাল আকৃতির স্লাইস পেতে পাওয়া যায়।
- তারপর ভেতর থেকে এপিডার্মাল কোষের একটি পাতলা, স্বচ্ছ স্তর খোসা ছাড়াই। পেঁয়াজ কোষের একেকটি স্তর এতটুক পাতলা হয়। খোসা ছাড়ানো খুব সহজ। এটা শুধু হাত দিয়েও করা যায় অথবা আমরা ফোরসেপ ব্যবহার করতে পারি।
- মাউন্টিং মাধ্যম হিসাবে পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি ওয়াচগ্লাসে কিছুটা পানি নিয়ে পেঁয়াজ কোষটিকে প্রথমে পানিতে ভিজিয়ে তারপর স্লাইডে রাখতে পারি। অথবা কোষটিকে সরাসরি স্লাইডে স্থাপন করে ১-২ ফোঁটা পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিতে পারি।
- অথবা কোষগুলোকে ভালো ভাবে দেখার জন্য বিভিন্ন ডাই যেমন 1-2 ফোঁটা আয়োডিন বা সেফ্রানিন বা মিথিলিন ব্লু যোগ করতে পারি।
- স্লাইডে স্থাপন করার পরে একটি কভারস্লিপ দিয়ে কোষটিকে এমন ভাবে ঢেকে দিবো যেন স্যাম্পলটি নড়াচড়া না করে এবং ভিতরে কোনো বাবল তৈরী না হয়। কভারস্লিপ ভালভাবে বসানোর জন্য আমরা ফোরসেপ বা সুই ব্যবহার করতে পারি।
- স্লাইড থেকে অতিরিক্ত পানি বা ডাই বের করতে কভারস্লিপের চারপাশে একটি টিস্যু আলতো করে ধরলে অতিরিক্ত পানি টিস্যু শুষে নিবে। অতঃপর আমাদের পেঁয়াজ কোষের একটি স্লাইড মাইক্রোস্কোপের নীচে পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রস্তুত।
পেঁয়াজ কোষ পর্যবেক্ষণ:
বক্সের মতো বা চতুর্ভূজের মতো দেখতে প্রতিটাই একেকটা পেঁয়াজ কোষ। চতুর্ভূজের বর্ডারটাই হচ্ছে কোষ প্রাচীর। প্রতিটি কোষের কোষ প্রাচীরের ভিতর গাঢ় গোলাকৃতির নিউক্লিয়াস স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি নিউক্লিয়াস কোষের প্রায় মাঝামাঝি এবং অনেকটা কোষ প্রাচীরের গা ঘেষে অবস্থিত। বড় ফাঁকা স্থান টা হলো কোষ গহ্বর।
- প্রচুর সংখ্যক কোষ স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান, বড় এবং আয়তক্ষেত্রাকার।
- প্রতিটি কোষে একটি নিউক্লিয়াস দেখা যাচ্ছে।
- কোষ প্রাচীর স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।
- নিউক্লিয়াসের অবস্থান সাইটোপ্লাজমের পরিধি ঘেঁষে।
- বড় শূন্যস্থান(গহ্বর) উপস্থিত।
- কোষের ভিতরে ছোট ছোট দানা দেখা যায়।
ডাই ব্যবহার করলে আরো স্পষ্ট নিউক্লিয়াস এবং কোষ প্রাচীর দেখা সম্ভব। আমরা এখানে মিথিলিন ব্লু ডাই ব্যবহার করেছি। নিল রঙের ছবি গুলোতে বিভিন্ন অংশ আরো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
পেঁয়াজের স্তরগুলিতে সাধারণ শর্করা (কার্বোহাইড্রেট) থাকে যার মধ্যে কিছু স্টার্চ (স্টার্চ দানা) হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়। যদি আয়োডিন ডাই ব্যবহার করা হয় সেক্ষেত্রে আয়োডিন স্টার্চের সাথে আবদ্ধ হয় এবং শর্করার দানাগুলোকে আরো স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান করে। যদিও পেঁয়াজের মধ্যে আলুর মত এতো পরিমাণে শর্করা থাকে না তবে আয়োডিন কম পরিমাণ শর্করাকেও মাইক্রোস্কোপের নিচে দৃশ্যমান করে তোলে। ছাত্ররা অনেকসময় তাদের স্লাইডে ক্লোরোপ্লাস্ট নাও দেখতে পারে যদিও পেঁয়াজ একটি উদ্ভিদ। খেয়াল করলে দেখা যায় পেঁয়াজের কোষ গুলো নির্দিষ্ট আকারের হয়ে থাকে। এর কারণ এদের কোষ প্রাচীরে সেলুলোজ থাকে যা এদের নিয়মিত গঠন বজায় রাখে। কিন্তু প্রাণি কোষ গুলো এমন নিয়মিত আকারের হয় না।
পরিশেষেঃ
পেঁয়াজ কোষের স্লাইড তৈরী এবং কোষগুলো পর্যবেক্ষণ করা খুবই সহজ এবং মজার একটি পরীক্ষা। ছাত্র-ছাত্রীরা চাইলে বাসায় বসেই এই পরীক্ষাটা করতে পারে। যেকোনো ধরণের মাইক্রোস্কোপ দিয়েই পেঁয়াজ কোষ দেখা সম্ভব, এর জন্য দামি পাওয়ারফুল মাইক্রোস্কোপের কোনো প্রয়োজন নেই।
নিচে আরো কিছু পেঁয়াজ কোষের চিত্র সংযুক্ত করা হলো ডাই সহ এবং ডাই ছাড়া।

More image of onion cell:





Similar contents:
1.রক্ত কণিকাসমূহ কি কি, উৎপত্তি ও কাজ (ভিডিও সহ)
2.রটিফার কি। উপকার এবং ক্ষতি (ভিডিও সহ)
Pingback: পেয়াঁজ কোষ পর্যবেক্ষণ | awesomeBiochem – awesomeBiochem
Pingback: Blood under microscope | easily visible cells | awesomeBiochem – awesomeBiochem
Pingback: রক্ত কণিকা সমূহ কি কি, উৎপত্তি ও কাজ – ভিডিও সহ -
Pingback: Cheek cell under microscope | Video + image - awesomeBiochem
Hi, i think that i saw you visited my web site so i came to “return the favor”.I’m trying to find things to improve my website!I suppose its ok to use a few of your ideas!!