ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগ ও লক্ষণঃ
ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রোগ গুলি নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
- লিভার সিরোসিস
- সিলিয়াক রোগ
- পিত্ত নালীর ব্যাধি
- রাতকানা
- জেরফথেলমিয়া
- বিটোটের দাগ
- শুষ্ক ত্বক
- চুলকানি
- চামড়া জ্বালা-পোড়া
- শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত
- উর্বরতা হ্রাস এবং বন্ধ্যাত্ত
ঘাটতি ও চিকিৎসাঃ
ভিটামিন এ এর অভাবের কারণে প্রতি বছর প্রায় 350000 প্রাক-স্কুল বয়সী শিশু অন্ধ হয়ে যায় এবং তাদের বেশিরভাগই বেঁচে থাকে না। ভিটামিন A এর অভাবের সাধারণ ক্লিনিকাল লক্ষণ হল রাতকানা এবং জেরোফথালমিয়া। অল্পবয়সী শিশুদের ভিটামিন এ-এর অভাবে চোখের কনজাংটিভাতে বিটোটের দাগ দেখা দেয় এবং চোখের বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। ভিটামিন এ-এর অপর্যাপ্ত গ্রহণ প্রোটিন-ক্যালোরি অপুষ্টি দেখা দিতে পারে, লিপিড ম্যালএবসোরপশন এবং জ্বরজনিত রোগের কারণ হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে, স্তন্যদানকারী মায়েরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
চিকিৎসা:
1 থেকে 6 বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে জেরোফথালমিয়ার জন্য প্রস্তাবিত চিকিৎসা হল 210umol রেটিনাইল পামিটেট সেবন। এবং এই ডোজটি এক দিন পরে এবং তারপরে 2-4 সপ্তাহ পরে পুনরাবৃত্তি করা। 1 বছরের কম বয়সী শিশুদেরকে একই সময়সূচীতে উপরে বর্ণিত ডোজের অর্ধেক পরিমাণ দেয়া। উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন “এ” টেরাটোজেনিক, তাই গর্ভাবস্থায় মহিলাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভিটামিন “এ” এর ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। যে সব অল্প বয়সী মহিলাদের চোখের মৃদু লক্ষণ আছে বা যারা ভিটামিন “এ”-এর অভাবজনিত এলাকায় বসবাস করেন তাদের জন্য দৈনিক 10umol ওরাল ডোজ দেয়া যেতে পারে। শুধুমাত্র কর্নিয়া জড়িত আছে এমন ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ডোজ দেওয়া উচিত।
ভিটামিন এ -এর উৎস:
- যকৃত
- দুগ্ধজাত পণ্য যেমন দুধ, পনির, মাখন এবং আইসক্রিম
- তৈলাক্ত মাছ যেমন হেরিং, সার্ডিন এবং টুনা।
- ভিটামিন এ-এর সবচেয়ে বড় উৎস হল হাঙ্গরের যকৃতের তেল, কড এবং হালিবুটের মতো সামুদ্রিক মাছ এবং মেরিন স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন মেরু ভাল্লুক।
- গাজর
- গাঢ়-সবুজ শাক
- ভুট্টা
- টমেটো
- পেঁপে
- কমলালেবু
- লাল পাম তেল
যুক্তরাজ্যে পুরুষদের ভিটামিন A-এর গড় এবং মাঝারি গ্রহণ আনুমানিক 1800ug এবং 1100ug এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তা প্রায় 1400ug এবং 900ug। যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মহিলাদের এবং অল্পবয়সী শিশুদের গড় ভিটামিন “এ” গ্রহণ পুরুষদের গ্রহণের 70-90%।
ভিটামিন এ চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন গ্রুপের একটি সদস্য। এটি মানুষের জন্য একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। খাদ্যের মধ্যে ভিটামিন এ দুটি প্রধান ফর্মে থাকে যেমনঃ
- রেটিনল – প্রাণিজ উৎসে রেটিনল হিসেবে থাকে অথবা ফ্যাটি এসিডের সাথে যুক্ত হয়ে রেটিনাইল এস্টার হিসেবে থাকে।
- ক্যারোটিনয়েড – আলফা ক্যারোটিন, বিটা ক্যারোটিন, গামা ক্যারোটিন হিসেবে তৃণভোজী উদ্ভিদ এবং প্রাণির দেহে থাকে যা প্রোভিটামিন এ হিসেবে কাজ করে।
ভিটামিন এ -এর সঞ্চয়স্থান:
80-90% প্যারেনকাইমাল কোষ এবং লিভারের স্টেলেট কোষে ভিটামিন এ ভালভাবে সঞ্চিত থাকে। যকৃতের প্যারানকাইমাল কোষ এবং প্রধান কোষগুলোতে অল্প পরিমাণে রেটিনল এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রেটিনাইল এস্টার থাকে। রেটিনাইল এস্টারগুলি অ্যাডিপোজ টিস্যু, ফুসফুস, টেস্টিস, অস্থি মজ্জা, চোখ এবং কিডনি সহ অন্যান্য টিস্যুতেও সঞ্চিত থাকে।
রেটিনয়েড-বাইন্ডিংপ্রোটিন (RBP):
রেটিনল, রেটিনাল, রেটিনয়েড এবং রেটিনোইক অ্যাসিড প্রাথমিকভাবে রক্তরস, আন্তঃকোষীয় স্থান এবং কোষের মধ্যে নির্দিষ্ট রেটিনয়েড-বাইন্ডিং প্রোটিনের(RBP) সাথে বাইন্ড করে থাকে। রেটিনল প্লাজমাতে বাইন্ড করে থাকে RBP দ্বারা এবং কোষে বাইন্ড করে থাকে Cellular binding protein(CRBP) type-1 এবং CRBP type-2 দ্বারা। রেটিনয়েড প্রোটিনের মধ্যে প্রোটিনের বিটা-ব্যারেলে আবদ্ধ থাকে। রেটিনাল চোখের মধ্যে Cellular binding protein(CRALBP) দ্বারা আবদ্ধ থাকে। রেটিনোইক এসিড বিভিন্ন টিস্যুতে CRABP দ্বারা বাইন্ড করে থাকে।
RBP ভিটামিন “এ” পরিবহন এবং ভিটামিন “এ” এর জৈবিক রূপান্তরের সাথে জড়িত।
ভিটামিন এ -এর ভূমিকা:
- দৃষ্টি: ভিটামিন “এ”-এর সর্বোত্তম সংজ্ঞায়িত কাজ হল দৃষ্টিশক্তি। চোখে ভিটামিন A সরবরাহের পথটি কয়েকটি ধাপে সংঘঠিত হয়। যেমন Rhodopsin এর ভেতর 11-cis retinal যখন আলোর সংস্পর্শে আসে তখন এটি Isomerization এর মাধ্যমে একটি ট্রান্সয়েড ইন্টারমিডিয়েট তৈরী করে, যা পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে প্রোটিনের কিছু গাঠনিক পরিবর্তন ঘটায়। এই পরিবর্তন মস্তিষ্কে সঞ্চারিত হয় এবং দৃষ্টিশক্তিতে ভুমিকা পালন করে। রেটিনায় অবস্থিত রঙ-সংবেদী কোণ কোষগুলোর মধ্যেও একইরকম প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়।
- ভিটামিন এ -এর দ্বিতীয় প্রধান কাজ হল কোষের পৃথকীকরণ ।
- ভিটামিন A Gene expression এ কাজ করে।
- ভ্রূণজনন: ভ্রূণজনিত বিকাশের জন্য রেটিনল এবং রেটিনোইক অ্যাসিডও অপরিহার্য। রেটিনোইক অ্যাসিড Hox জিনের প্রকাশ ঘটায়, এই Hox জিন পরবর্তীতে জীবের বিভিন্ন অংশের বিকাশ সাধন করে।
- এছাড়াও ভিটামিন এ ইমিউন রেসপন্স এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন “এ” স্বাদ, শ্রবণশক্তি, ক্ষুধা, দৈহিক বৃদ্ধি, শুক্রাণু উৎপাদন সহ অন্যান্য অনেক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় বিশেষ ভুমিকা পালন করে।
টক্সিসিটিঃ
উচ্চ মাত্রায় খাওয়া হলে ভিটামিন “এ” বিষাক্ত হতে পারে। বিষাক্ততার তিনটি পর্যায় হল তীব্র, দীর্ঘস্থায়ী এবং টেরাটোজেনিক।
তীব্র বিষাক্ততা(Acute toxicity):
একিউট টক্সিসিটি তৈরি হয় যখন vit A-এর খুব উচ্চ ডোজ যেমন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সাধারণত >100 times এবং শিশুদের মধ্যে >20 times দেওয়া হয়। প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, ঝাপসা দৃষ্টি এবং পেশীগুলির সমন্বয়হীনতা। দ্বিতীয় পর্যায়ে তন্দ্রা, অস্বস্তি, ক্ষুধামন্দা, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, চুলকানি, বমি হয়।
দীর্ঘস্থায়ী বিষাক্ততা(Chronic toxicity):
এটি ঘটে যখন vit A বছরের পর বছর অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া হয়। এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, অ্যালোপেসিয়া(alopecia), ঠোঁট ফাটা, শুষ্ক ত্বক এবং চুলকানি, হেপাটোমেগালি(hepatomegaly), হাড় এবং জয়েন্টে ব্যথা ইত্যাদি।
টেরাটোজেনিক বিষাক্ততা(Teratogenic toxicity):
এর মধ্যে রয়েছে মারাত্মক রিসোর্পশন, গর্ভপাত, জন্মগত ত্রুটি এবং বংশধরদের স্থায়ী লার্নিং ডিসএবিলিটি।
Similar contents:
১)ভিটামিন সি এর উৎস এবং কাজ।২)Lysozyme mechanism | brief and easy
The 12 b vitamin is one of the b vitamins that are crucial to maintain a sound body.
Otherwise known as Cobalamin, the 12b vitamin is necessary for the processes to
convert the carbohydrates, fats and proteins from food into energy.
Also visit my webpage :: Blair Waddups
Pingback: Vitamin C | Dietary sources and metabolism | easy to remember | awesomeBiochem – awesomeBiochem
Pingback: Lysozyme mechanism | simple and easy - awesomeBiochem
Pingback: লাইসোজাইম এর কাজ, মেকানিজম, ওভারভিউ - awesomeBiochem
Pingback: তরল মাধ্যমে কঠিন পদার্থের ব্যাপন পরীক্ষা | awesomeBiochem
Pingback: Sc ও Zn অবস্থান্তর মৌল নয় কেন? | Simple & easy - awesomeBiochem
Pingback: নাইট্রোজেন চক্র কী? ধাপসমূহ এবং গুরুত্ব - awesomeBiochem
Pingback: https://www.awesomebiochem.com/2021/09/18/%a...
Pingback: Vitamin A sources and functions – easyBiochem