ব্যাপন কাকে বলে?
কোনো মাধ্যমে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের উচ্চ ঘনত্বের স্থান থেকে নিম্ন ঘনত্বের স্থানের দিকে স্বতঃস্ফূর্ত ও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে।
যে পদার্থ কম সময়ে দ্রুত বেশিদূর ছড়িয়ে পড়তে পারে সে পদার্থের ব্যাপনের হার বেশি আর যে পদার্থের ছড়িয়ে পড়তে সময় বেশি লাগে সে পদার্থের ব্যাপনের হার কম।তাপ বাড়ালে ব্যাপনের হার বৃদ্ধি পায়। কারণ তাপ বাড়ালে অণুতে উপস্থিত কণাগুলোর গতিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কণাগুলোর মধ্যকার আকর্ষণ কমতে থাকে। ফলে কণাগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ব্যাপনের হার বৃদ্ধি পায়। অনুরূপভাবে, তাপমাত্রা হ্রাস করলে ব্যাপনের হার কমে যায়।
গ্যাস এবং তরলের ক্ষেত্রে ব্যাপন দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হয়। দুটি গ্যাসের ব্যাপন হওয়া সম্ভব, দুটি তরলের ব্যাপন অর্থাৎ তরলের মধ্যে তরলের ব্যাপন হওয়া সম্ভব কিন্তু কঠিনের মধ্যে কঠিনের ব্যাপন সম্ভব নয়। কঠিনের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু অন্যরকম। তরলের মধ্যে কঠিনের ব্যাপন খব ধীর গতিতে সম্পন্ন হয়।
তরল মাধ্যমে কঠিন পদার্থের ব্যাপন পরীক্ষাঃ
- পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এর ব্যাপন
কক্ষ তাপমাত্রায় একটি কাচের পাত্রে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে তাতে এক চিমটা বা তারও কম পরিমাণ পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট(KMnO4) ছেড়ে দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে দেখা যাবে KMnO4 এর দানাগুলো দ্রবীভূত হয়ে সম্পূর্ণ দ্রবণটিকে গোলাপি বর্ণে পরিণত করেছে। আমরা জানি পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট গোলাপি বর্ণের হয়ে থাকে। পানিতে ছাড়ার পর KMnO4 কণাগুলো একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধীরে ধীরে গতিশক্তি প্রাপ্ত হয়ে পানির মধ্যে এদিকে-সেদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বেশ কিছু সময় পর পুরো পাত্রই গোলাপি বর্ণে পরিণত হয়ে যায়। এক্ষেত্রে মূলত পানি তথা তরল মাধ্যমে কঠিন পদার্থের ব্যাপন হয়েছে।
যদি পরীক্ষাটি গরম পানির মধ্যে করা হত তাহলে কি হত? তখন দেখা যাবে ঠান্ডা পানির তুলনায় গরম পানিতে KMnO4 এর কণাগুলো আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং গোলাপি বর্ণ ধারণ করছে অর্থাৎ পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট এর ব্যাপনের হার বেড়ে যাবে। কারণ গরম পানি থেকে কণাগুলো তাপ গ্রহণ করে অধিক গতিশক্তি প্রাপ্ত হয় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। অর্থাৎ তাপ প্রয়োগ করলে কঠিন পদার্থের ব্যাপনের হার বৃদ্ধি পজাবে। কাজেই গরম পানিতে কঠিনের ব্যাপন সর্বাধিক হয়।
যদি একই পরিমাণ পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট আরো বেশি পানির মধ্যে দেয়া হয় তখন KMnO4 এর কণাগুলো আরো দূরে দূরে ছড়িয়ে পড়বে এবং গোলাপি রং টা আরো হালকা হবে।
- কপার সালফেট এর ব্যাপন
কপার সালফেট এর ব্যাপন দেখার জন্য একটি 100mL এর বিকার নিয়ে তাতে 50mL পানি দিয়ে পূর্ণ করা যেতে পারে। তারপর সেই পানিতে অল্প পরিমাণ বা 2g কপার সালফেট ক্রিস্টাল দিয়ে দিলে দেখা যাবে ধীরে ধীরে পানির রং নীলে পরিণত হচ্ছে। কিছুক্ষণ সময় রেখে দিলে দেখা যাবে সমস্ত কপার সালফেট দ্রবীভূত হয়ে গেছে পুরো পানি নীল হয়ে গেছে। অর্থাৎ কপার সালফেটের ব্যাপন ঘটেছে।
Pingback: Sc ও Zn অবস্থান্তর মৌল নয় কেন? | simple and easy | awesomeBiochem – awesomeBiochem
Pingback: তরল ও জলীয় দ্রবনের মধ্যে পার্থক্য | awesomeBiochem – awesomeBiochem